নাইট গার্ড (নৈশ প্রহরী) যখন উপজেলা নির্বাচনের পোলিং অফিসার। অনুমোদনহীন ও কার্যক্রম বিহীন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদেরকেও দায়িত্বে দেয়া এবং কর্মকর্তা নিয়োগে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ।
২১শে মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট গ্রহনে নিয়োগকৃতদের গলাচিপা উপজেলা নির্বাচন অফিসের এরকম বিভিন্ন অসংগতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া নির্বাচনের পূর্বে কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ গ্রহন করলেও অনেককে নির্বাচনের দায়িত্বে দেয়া হয়নি। যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তি থাকা সত্ত্বেও নাইট গার্ড (নৈশ প্রহরী) , পিওন, ক্ষেত্র সহকারী, ল্যাব সহকারী, স্টোর কিপার, টিউবওয়েল মেকানিকদের নির্বাচনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
দক্ষিন পানপট্টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা নামে একটি অনুমোদনহীন ও কার্যক্রম বিহীন প্রতিষ্ঠানে নামে মাত্র দুই জন শিক্ষক অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে নির্বাচনের দায়িত্বে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রতিষ্ঠানের ঘর থাকলেও নেই কোনো কার্যক্রম। ঐ প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী ঐ স্কুলের সহকারী শিক্ষক সাথী কে রতনদী তালতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পোলিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অথচ মোঃ ইব্রাহিম গলাচিপা জিসান কম্পিউটার সেন্টারে অপারেটর হিসেবে কাজ করে বলে জানা গেছে।
গলাচিপা বিপিসি স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে গলাচিপা এনজেড মাদ্রাসার প্রভাষক মো: সফিউল্লাহকে পোলিং অফিসার আর গলাচিপা প্রকৌশলী কার্যালয়ের হিসাব রক্ষক কে সহকারী প্রিজাইডিং নিয়োগ দেয়া হয়েছে। মো: সফিউল্লাহ জানালেন, আমার প্রতিষ্ঠানের তিন প্রভাষককে পোলিং অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, তার অফিসের নাইট গার্ড (নৈশ প্রহরী) পদটি গোপন করে অন্য পদ ব্যবহার করে সে পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছে।
গলাচিপা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমান জানান, গলাচিপা উপজেলায় ইবতেদায়ী প্রতিষ্ঠানের কোনো কার্যক্রম নাই। পানপট্টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা নামের প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রমহীন।
এই বিষয় গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ও রতনদি তালতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার মো.জহিরুন্নবী জানান, ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী সাথী বেগম আমার কেন্দ্রে পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয় আমার কিছু জানা নেই।
গত ১০ ও ১১মে তারিখ গলাচিপা উপজেলা নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসার হিসেবে ১৯শত ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তবে প্রশিক্ষণ বিহীন ব্যক্তিদেরকেও নির্বাচনের দায়িত্বে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশিক্ষনের নামে এমন নাটকীয়তা ও প্রশিক্ষণ বিহীন ব্যক্তিদের দিয়েই যদি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের দায়িত্বে দেয়া হয় তবে সরকারের নির্বাচন উপলক্ষে কোটি কোটি টাকা খরচ করে প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা কী বলেও এসময় প্রশ্ন তোলেন প্রশিক্ষণ নেয়া নির্বাচনে বাদ পড়া ব্যক্তিগন। উপজেলার বিভিন্ন অফিসের পিওনকে পোলিং অফিসার, অফিস সহকারীকে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্বও দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
গলাচিপা উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোঃ জহিরুল ইসলাম কে তার অফিসকক্ষে না পেয়ে মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই,আমি জেনে আপনাকে জানাবো।যদি ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
পটুয়াখালী সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার খান আবি শাহানুর খান জানান,আমি যতটুকু জানি বিধি অনুসারে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।